
গণহত্যা, সন্ত্রাস ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, বিচারের আগপর্যন্ত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণাসহ বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
বুধবার সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে বিএনপির সঙ্গেও বৈঠক করেছে হেফাজত।
জানা গেছে, সভায় অংশ নেয় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এবং হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
সভায় হেফাজতের প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন সংগঠনটির নায়েবে আমির আহমেদ আবদুল কাদের, মাওলানা আহমেদ আলী কাসেমী, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। এনসিপির প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, সংগঠক মো. সানাউল্লাহ ও রফিকুল ইসলাম আইনী।
এ মতবিনিময় সভা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি এনসিপি। সভার বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির নেতা আরিফুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণহত্যার দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, বিচারের আগপর্যন্ত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নির্বাচনের আগে দলটির বিচার দৃশ্যমান হওয়া এবং দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ এবং সংস্কার ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মতবিনিময়ে দেশে গণহত্যা, সন্ত্রাস ও মানবতাবিরোধী অপরাধে আওয়ামী লীগের বিচার, সংস্কার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মামলা মোকদ্দমা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা হয়। মতবিনিময়ে আওয়ামী লীগের বিচারসহ কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছে হেফাজত ও এনসিপি।
এতে বলা হয়েছে, হেফাজতের দাবি, সংবিধানে মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পূণস্থাপন এবং বহুত্ববাদ বাদ দিতে হবে। গণহত্যার দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল এবং রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে। নির্বাচনের আগেই আওয়মী লীগের বিচারের পদক্ষেপ দৃশ্যমান করতে হবে। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
এছাড়া মতবিনিময়ে সমসাময়িক রাজনৈতিক ও চলমান সংস্কার বিষয়ে আলোচনা হয়। ফ্যাসিবাদের সময়ে হেফাজতে ইসলাম ও অন্যান্যদলগুলোর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিথ্যা হয়রানিমূলক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার ও নিষ্পত্তি বিষয়ে একমত পোষণ করেন। সংস্কার নিয়ে পারস্পরিক প্রস্তাবনাগুলো উত্থাপন করা হয়।